নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১ নভেম্বর৷৷ রেগায় ২৩টি প্রশ্ণের উত্তর জানতে সশরীরে আসছেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিনিধিদল৷ আগামী ৫ নভেম্বর কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের উচ্চ পর্যায়ের এক প্রতিনিধি দল রাজ্যে আসবেন৷ তাঁরা, রাজ্যে বিভিন্ন জেলায় ঘুরে রেগার কাজকর্মের খোঁজখবর নেবেন৷ সাথে, কেন্দ্র যে ২৩টি প্রশ্ণ রাজ্যকে জবাব দিতে বলেছিল, তার রিপোর্ট তাঁরা সংগ্রহ করবে বলে সূত্রের খবর৷ কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সফরকে ঘিরে প্রশাসনে প্রচন্ড দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে৷ ভিষণভাবে চিন্তিত বিভিন্ন জেলার জেলাশাসকরা৷ কারণ, নির্দেশ মোতাবেক যে ২৩ টি বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রক থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে সে বিষয়ে গত ২৫ অক্টোবরের মধ্যে জেলা শাসকদের রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সূত্রের খবর, অধিকাংশ জেলায় জেলাশাসক পুরো রিপোর্ট তৈরি করতে পারেননি৷
গত ১৭ অক্টোবর পর্যালোচনা সভার শুরুতে রেগা সম্পর্কিত আলোচনায় গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রধান সচিব এল কে গুপ্তা জানিয়েছিলেন, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক ২৩ রকমের প্রশ্ণ তুলে ত্রিপুরায় রেগার বরাদ্দ স্থগিত রেখেছে৷ তারা জানিয়ে দিয়েছে, এই ২৩ রকম প্রশ্ণের সদুত্তর এবং যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করে রাজ্য থেকে রিপোর্ট পাঠানোর পরই কেন্দ্র থেকে অর্থ বরাদ্দ করা হবে৷ আগামী নভেম্বর মাসে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক থেকে একটি টিম রাজ্যে এসে রেগার কাজকর্ম খতিয়ে দেখবে বলে জানা গেছে৷ লক্ষণীয় বিষয় হল, রেগা চালু হবার পর থেকে এখন পর্যন্ত এধরণের কোনও প্রশ্ণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রক থেকে তোলা হয়নি৷ যে ২৩ রকমের প্রশ্ণ উত্থাপন করা হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, প্রতি বছর এক ধরণের কর্মসূচি নেওয়া যাবে না, কর্মসূচিতে বৈচিত্র আনতে হবে৷ ওয়েজ পেমেন্টের ক্ষেত্রে ব্যাক্তিগত ব্যাঙ্ক একাউন্ট হতে হবে এবং সমস্ত একাউন্টে আধার সংযোগ ঘটাতে হবে৷
গ্রামোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী নরেশ জমাতিয়া সম্প্রতি বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার চাইছে রেগা কর্মসূচি তুলে দিতে৷ এজন্য একদিকে যেমন প্রতিবছর বরাদ্দ কমিয়ে দিচ্ছে, পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের প্রশ্ণ তুলে বাঁধা-বিপত্তির সৃষ্টি করে কর্মসূচি রূপায়ণে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে৷ বিভিন্ন প্রশ্ণ তুলে ও বাঁধা-বিপত্তি তৈরি করে অজুহাত তুলে বরাদ্দও স্থগিত রাখছে৷ ২০১৭-১৮ সালে রেগায় মাত্র ৪২ শ্রম দিবসের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে৷ যদিও ২০১৬-১৭ সালে ত্রিপুরায় ৮০ শ্রম দিবসের কাজ হয়েছিল৷ ২০১৭-১৮ সালে শ্রম দিবসের হার কেন কমানো হল তার কোনও সঠিক ব্যাখ্যা কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারকে দেওয়া হয়নি৷ বর্তমান অর্থ বছরে এমআইএস অনুযায়ী ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ২৪ শ্রম দিবসের কাজ হয়েছে৷ কেন্দ্র থেকে এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে ২৯০৭৩ কোটি টাকা৷ এর সঙ্গে রাজ্যের শেয়ার আছে আরও ২৭৬৮ কোটি টাকা৷ এখন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২৮৩১৫ কোটি টাকা৷ ২০১৬-১৭ সালে রাজ্য সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল রেগা কর্মসূচি রূপায়ণের জন্য৷ কেন্দ্রীয় সরকার কথা দিয়েও আজ পর্যন্ত সেই টাকা মিটিয়ে দেয়নি৷
সূত্রের খবর, প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বিশেষ করে খতিয়ে দেখবেন লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়গুলি৷ এমনিতেই, বিশালগড়, পেচারথল, রূপাইছড়ি ব্লকে দূর্নীতি হয়েছে, তা রাজ্য সরকার সম্প্রতি স্পষ্টিকরণে স্বীকার করেছে৷ ফলে, রাজ্য সরকার নানাভাবে চিন্তিত কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের এই সফরকে ঘিরে৷