নিজস্ব প্রতিনিধি, বিরাশিমাইল, ২৫ অক্টোবর৷৷ যেকোন দেশ বা রাজ্যের উন্নয়নের প্রধান পূর্ব শর্ত হচ্ছে শান্তি৷ আমাদের রাজ্যে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রয়েছে বলেই রাজ্য সরকার বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কর্মসূচী রূপায়ণ করতেপারছে৷ রাজ্যের শান্তিপ্রিয় জনগণও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচী রূপায়নে সরকারের পাশে থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন৷ আজ ধলাই জেলার লংতরাইভ্যালী মহকুমার ৮২ মাইলে রাজ্যের ১৮ তম শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ তিনি বলেন, ত্রিপুরার ছেলেমেয়েরা যাতে রাজ্যে থেকেই শিল্প কারিগরীতে প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষতা অর্জন করতে পারে সেই লক্ষ্যে রাজ্যের প্রতিটি মহকুমায় ১টি করে শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার৷ যে মহকুমাগুলিতে শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নেই সেই সব মহকুমাতেও ধীরে ধীরে শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করেন৷ তাদের অধিকাংশই কৃষির উপর নির্ভরশীল৷ কিন্তু বর্তমানে কেন্দ্র সরকারের দৌলতে দেশের কৃষিক্ষেত্রে সঙ্কট তৈরী হয়েছে৷ সেচের জল, বীজের অভাবে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন৷ দেশে গত সাড়ে তিন বছরে কৃষক আত্মহত্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে৷ বছরে গড়ে ১২ থেকে ১৩ হাজার কৃষক আত্মহত্যা করছে৷ আমাদের রাজ্যে ঋণের দায়ে কৃষক আত্মহত্যা করেছে এমন কোন নজীর নেই৷ কেন্দ্রে বর্তমান সরকার দেশে আচ্ছে দিন আনার স্বপ্ণ দেখিয়ে দেশের শাসন ক্ষমতা দখল করে৷ কিন্তু আমাদের অভিজ্ঞতা কি? দেশে বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, কর্মরত মানুষরা কাজ হারাচ্ছে৷ বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার ধনী লোকদের স্বার্থে কাজ করছে৷ ফলে গরীবরা আরও গরীব হচ্ছেন৷ দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষক – শ্রমীকরা আন্দোলন শুরু করে দিয়েছেন৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজেও একটা অশুভ শক্তি জাতি-উপজাতির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করার প্রয়াস চালাচ্ছে৷ উপজাতি অংশের জনগণকে আলাদা রাজ্যের স্বপ্ণ দেখিয়ে জাতি-উপজাতির মধ্যে বিরোধ লাগাবার চেষ্টা করা হচ্ছে৷ এর আগেও রাজ্যে বিদেশী বিতারণের নামে জাতি-উপজাতিদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক বিরোধ লাগাবার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু রাজ্যের শান্তিপ্রিয় জাতি-উপজাতি উভয় অংশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ ভাবে সেই চেষ্টাকে প্রতিহত করেছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে রাজ্যে যে শান্তি ও সৌভ্রতৃত্বের পরিবেশ রয়েছে সেটা যাতে কোনোভাবে বিনষ্ট না হয় তার জন্য আমাদের সকরলকেই সতর্ক থাকতে হবে৷
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে শিল্পমন্ত্রী তপন চক্রবর্তী বলেন, ১৯৭৮ সালের আগে আমাদের রাজ্যে মাত্র ৩টি আই টি আই ছিল৷ বর্তমানে তা বৃদ্ধি পয়ে হয়েছে ১৮ টি৷ সেইসব আইটি আইগুলি থেকে শত শত ছাত্রছাত্রী প্রশিক্ষণ নিয়ে কারিগরি দক্ষতা অর্জন করেছে৷
অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিধায়ক দিবাচন্দ্র রাঙ্খল এবং শিল্প দপ্তরের অধিকর্তা ডি জে জেনার৷ উল্লেখ্য, আই টি আই ভবনটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১২ কোটি টাকা৷ এতে ৮টি ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা সহ ছাত্রদের জন্য ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হোস্টেলও রয়েছে৷
2017-10-26