নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১০ অক্টোবর৷৷ পেট্রোপণ্যে কমছেনা ভ্যাটের হার৷ জিএসটিতে পেট্রোপণ্য যুক্ত হোক চাইছেনা রাজ্য সরকার৷ তবে, পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে করের বোঝা লাঘব করুক কেন্দ্রীয় সরকার, তা চাইছে রাজ্য সরকার৷ মঙ্গলবার মহাকরণে এই সমস্ত বিষয় সোজাসাপ্ঢা জানালেন অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহা৷
পেট্রোল ডিজেলের দাম কমানোর ক্ষেত্রে রাজ্যগুলির কাছে ভ্যাটের হার কমানোর আবেদন রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ এই বিষয়ে অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহার সাফ কথা, আপাতত রাজ্যে পেট্রোপণ্যে ভ্যাট কমানোর কোন চিন্তাভাবনা নেই৷ পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, কেন্দ্রের আবেদনে সাড়া দেওয়াও সম্ভব নয়৷ বরং তিনি পরামর্শ দেন, পেট্রোল ডিজেলের দাম কমানোর ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার কেন্দ্রীয় কর লাঘব করুক৷
পেট্রোপণ্য জিএসটিতে অন্তর্ভুক্ত হোক, এই দাবির বিষয়ে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, সর্বশেষ জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে মুখ্য আলোচ্য বিষয়বস্তুর বাইরে পেট্রোপণ্যকে জিএসটিতে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷ কিন্তু, এই বিষয়ে রাজ্য সমূহের মধ্যে মতান্তর রয়েছে৷ তিনি জানান, অনেক রাজ্যই চাইছেনা পেট্রোপণ্য জিএসটিতে অন্তর্ভুক্ত হোক৷ তবে, কয়েকটি রাজ্য পেট্রোপণ্য জিএসটিতে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে আপত্তি নেই বলে জানিয়েছে৷ অর্থমন্ত্রী বলেন, আসাম, কেরালা, ত্রিপুরা সহ বেশ কয়েকটি রাজ্য এবিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে৷ তাঁর যুক্তি, রাজ্যের নিজস্ব আয়ের মাধ্যম হিসেবে পেট্রোল ডিজেল থেকে উল্লেখযোগ্য আয় হয়ে থাকে৷ সেক্ষেত্রে পেট্রোপণ্য জিএসটির আওতাধীন হলে রাজ্যের হাতে কর সংগ্রহের কোন সুযোগ থাকবেনা৷ বর্তমানে ডিজেলে ১৩৫ শতাংশ, পেট্রোলে ২০ শতাংশ এবং বিমানের জ্বালানীতে ১৮-২২ শতাংশ ভ্যাট ধার্য্য রয়েছে রাজ্যে৷ অর্থমন্ত্রী জানান, গত অর্থবছরে ঐ খাতে ভ্যাট বাবদ ১২০ কোটি টাকা আয় হয়েছে৷ ফলে, পেট্রোপণ্য জিএসটিতে অন্তর্ভুক্ত হলে রাজ্যের সরাসরি এই কর সংগ্রহ বন্ধ হয়ে যাবে৷
গত ১জুলাই থেকে সারাদেশে চালু হয়েছে জিএসটি৷ আইন অনুযায়ী রাজ্য জিএসটি নেটওয়ার্ক থেকে রাজ্যের মূল কর সংগ্রহের অংশ পাচ্ছে৷ এখন পর্যন্ত কি পরিমান করের ভাগ রাজ্য পেয়েছে তা নির্দিষ্ট করে হিসেব নেই বলে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন৷ জিএসটির ফলে রাজ্যের কি পরিমাণ আর্থিক লোকশান হবে এ বিষয়েও নির্দিষ্ট করে কিছুই এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয় বলে জানান অর্থমন্ত্রী৷ তবে, জিএসটি চালু হওয়ার ফলে যদি কর সংগ্রহে প্রাপ্ত অংশে বিগত বছরের তুলনায় রাজ্যের ক্ষতি হয়, তাহলে ক্ষতিপূরণ দেবে কেন্দ্রীয় সরকার, জানান তিনি৷ রাজ্যের ক্ষতি বহন করবে কেন্দ্রীয় সরকার, তা সত্বেও জিএসটিতে পেট্রোপণ্যের অন্তর্ভুক্তিতে আপত্তি কোথায়, সেবিষয়ে অর্থমন্ত্রী স্পষ্ট করে কিছুই জানাননি৷ কেবল যুক্তি তুলে ধরে বলেন, সমস্ত কিছু জিএসটির আওতাধীন হলে রাজ্যে কর সংক্রান্ত যে পরিকাঠামো রয়েছে তা গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে৷ এদিন অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যে স্পষ্ট, আপাতত পেট্রোল ডিজেলের দাম কমার কোন সম্ভাবনা নেই৷
2017-10-11