নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ অক্টোবর৷৷ রাজনৈতিক দলাদলিতে কার্যত দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গেছে চাকরীচ্যুত ১০,৩২৩ শিক্ষকদের ঐক্য৷ চাকরীচ্যুতদের একটি অংশ বিজেপি শিবিরে চলে গেছে৷ ১০,৩২৩ শিক্ষকের চাকরীচ্যুতি এবং এর পরবর্তী পর্যায়ে তাদের নিয়োগের জন্য সৃষ্ট ১২ হাজার অশিক্ষক পদে নিযুক্তিতে জটিলতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷ রাজ্যে নতুন ধরনের অস্থিরতার সম্ভাবনা আজ রীতিমত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে৷ চাকরীচ্যুতদের সিংহ ভাগই শাসক সিপিআইএম’র অনুগত ছিল, চাকরি পাবার আগে থেকেই৷ কিন্তু এই ক্ষেত্রে বড় ধরনের ফাটল ধরেছে৷ চাকরীচ্যুত ১০,৩২৩ শিক্ষকদের আজ রবীন্দ্র ভবনের সামনে জমায়েত এবং পরে র্যালি হবার কথা ছিল৷ কিন্ত কতিপয় দুসৃকতকারী আচমকা হামলা চালায় চাকরীচ্যুত শিক্ষকদের উপর৷ তাদের পোষ্টার ব্যানার ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে৷ হেলমেট পরে তারা সেখানে চরাও হয় সর্বসমক্ষে৷ ফলে পুরো কার্যক্রম বাতিল হয়ে গেছে কিন্তু ক্ষোভে ফুঁসছেন চাকরীচ্যুত শিক্ষকরা৷ চাকরীচ্যুত শিক্ষকদের নেতা বিমল সাহা বলেন, শাসক দলের কতিপয় সমর্থক তাদের উপর হামলা চালিয়েছে৷ ফলে তাদের সংগঠন ভেঙে গেছে৷ তবে রাজ্য সরকারের বুিরদ্ধে তাদের লড়াই জারি থাকবে৷ অযোগ্যদের চাকরি দিতে গিয়ে আমাদের মত যোগ্যতা সম্পন্ন অনেকের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিয়েছে এই সরকার৷ ফলে আক্রমণ করে আমাদের ঠেকানো যাবে না৷ এদিকে আজকের ঘটনার পর বিভিন্ন দিকেও ক্ষোভ ছড়িয়েছে৷ পরিস্থিতি হিংসাত্মক আকার নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
এদিকে, ১০,৩২৩ জনের চাকরীচ্যুতি, ১২ হাজার নতুন নিয়োগে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের পথ তৈরী করেছে অহঙ্কারী মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ চাকরী ইস্যুতে সংবাদ প্রতিনিধির এক প্রশ্ণের উত্তরে সরকারকে এমনভাবেই বিধঁলেন বিজেপি রাজ্য প্রভারী সুনীল দেওধর৷ তাঁর মতে আইন লঙ্ঘন করে চাকরী দিয়ে জটিলতা তৈরী করেছে শাসক দল৷ ১২ হাজার নতুন নিয়োগ নিয়ে ও গানিতিক জচ্চুরির অভিযোগ তোলেছেন সুনীল দেওধর৷ বামফ্রন্ট সরকার মিথ্যার উপর দাঁড়িয়ে শেষ রক্ষা করতে পারবেনা৷ ৪ মাস পর ঢাকিশুদ্ধ বিসর্জন হবে মানিকবাবুদের দাবী করেছেন শ্রীদেওধর৷ রাজ্যজুড়ে কর্মচ্যুত শিক্ষকরা যখন গভীর উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন তখন সরকারকে চাপে ফেলে বেকারদের নিয়ে রসিকতা করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন৷ সারা রাজ্যে ৬টি বিদ্যালয়ে পাঠাগার রয়েছে৷ নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ৪০০-র উপরে লাইব্রেরী এসিসেন্ট নিয়োগ করার নামে কাদের বোকা বানানো হচ্ছে প্রশ্ণ তোলেছেন তিনি৷ বহু সুকল শিক্ষক স্বল্পতা ভুগছে৷ শিক্ষক নিয়োগ ব্রাত্য রেখে কাউন্সিলার নিয়োগ করে দলীয় কমরেড পুণর্বাসন দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে ও সরকারের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি আক্রমণ হানেন দেওধর৷ তাঁর দাবী ৫ মাস পর বহুমত নিয়ে বিজেপি সরকার গঠন করে ৭ লক্ষ ৮৫ হাজার বেকারের কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত করে উন্নত ত্রিপুরা গড়ে তোলবেন৷
অন্যদিকে, ১০,৩২৩ শিক্ষকের চাকরিচ্যুত হওয়া এবং এর পরবর্তী পর্যায়ে তাদের নিয়োগের জন্য সৃষ্ট ১২ হাজার অশিক্ষক পদে নিযুক্তিতে জটিলতা স্পষ্ট হয়ে ওঠায় রাজ্য সরকার এবং ক্ষমতাসীন দল বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য এবং শাসক দলের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য বিক্ষোভের ধারা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেবার জন্য নেতৃত্ব তোরজোড় শুরু করেছে৷ পার্টির সর্বোচ্চ স্তর থেকে সর্বনিম্ন স্তর পর্যন্ত সমস্ত নেতাদের সর্তক করে দেওয়া হয়েছে৷ অভিযোগ চাকরীচ্যুতদের ক্ষোভ শাসক দলের উপর পড়ার আশঙ্কা রয়েছে৷ ধর্মনগরে ও জাতীয় একটি ঘটনাও ঘটেছে৷ ফলে শিক্ষকদের ক্ষোভ অন্যখাতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা ভিন্ন শাসক দলের নেতারা বিকল্প কোন গত্যন্তর দেখছেন না৷ জানা গেছে, আগামী দুএকদিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নীতি নির্ধারণ করে পার্টির নেতাদের মাধ্যমে এলাকাভিত্তিক নীরব প্রচারে যাবে পার্টি৷ যদিও শিক্ষামন্ত্রী তপন চক্রবর্তী তথা রাজ্য সরকার আগামী ২৪ তারিখ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সকলকে ধৈর্ষ ধরার কথা বলেছেন৷ আগামী ২৪ অক্টোবর ১২ হাজার অশিক্ষক পদের নিযুক্তি সংক্রান্ত বিষয়ে মামলার পুনরায় শুনানি হবে সুপ্রিমকোর্টে৷
2017-10-08