নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ অক্টোবর৷৷ রজ্যে আবার জঙ্গী তৎপরতা শুরুর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে৷ জঙ্গী দলের চাঁদার নোটিশ যাচ্ছে প্রত্যন্ত গ্রাম গুলোতে৷ রাজ্য পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাজ্যের প্রত্যন্ত গন্ডাছড়ায় এনএলএফটি জঙ্গী গোষ্ঠীর সহযোগীরা যথেষ্ট সক্রিয় হয়ে উঠেছে৷ ইতিমধ্যেই চাঁদার নোটিশ গেছে গন্ডাছড়ার বোয়ালখালী গ্রামের জনজাতিদের কাছে৷ পুলিশ এগুলো উদ্ধার করেছে৷ ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে৷ একই সঙ্গে জঙ্গী বিরোধী অভিযানেও গতি আনা হয়েছে৷ রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে গোটা মহকুমায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে৷ পাহাড়ী এলাকাগুলিতে টিএসআর জওয়ান এবং সীমান্ত এলাকায় বিএসএফকে কঠোর নজরাদারী চালাতে বলা হয়েছে৷ জনগণকেও সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে৷
একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের ঘাঁটি থেকে বেশ কিছু জঙ্গী রাজ্যে অনুপ্রবেশ করেছে৷ তারা সিপাহীজলা জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে রাজ্যে অনুপ্রবেশ করে পাহাড়ী এলাকায় অবস্থান করছে৷ প্রায় ছয় মাস আগে জঙ্গীরা বিশ্রামগঞ্জের বেশ কয়েকটি উপজাতি অধ্যুষিত গ্রামে ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক দলের নেতাদের চাঁদার নোটিশ দিয়েছিল৷ নোটিশে বলা হয়েছে যদি চাঁদা দেওয়া না হয় তাহলে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হবে৷ ঐসময় পুলিশ প্রশাসন অনেকটাই তৎপরতা দেখিয়েছে৷ কিন্তু, আজ পর্যন্ত এই বিষয়ে পুলিশের হাতে কোন কিছুই আসেনি৷ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের নিষ্ক্রীয়তা নিয়েও জনমনে প্রশ্ণ উঠছে৷ এদিকে, ত্রিপুরার প্রত্যন্ত মহকুমা বলে পরিচিত গন্ডাছড়ার বিভিন্ন উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় সশস্ত্র জঙ্গীদের আনাগোনা লক্ষ্য করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা৷ তারা নিরাপত্তাহীনতায় কাটাচ্ছেন রাত৷
সামনেই রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন৷ এর আগে জঙ্গীদের আনাগোনা এবং চাঁদর নোটিশ দেওয়ার ঘটনা অনেকটাই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে তথ্যাভিজ্ঞ মহল৷ অতীতে দেখা গিয়েছে প্রতিটি বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বে রাজ্যে জঙ্গীদের তৎপরতা বেড়ে যায়৷ অনেকেই দাবি করছেন, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য দলগুলি জঙ্গীদের সক্রীয় করে তোলতে মদত দেয়৷ রাজ্যে অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করে নির্বিঘ্নে ভোটপর্বকে সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চলে৷ এবারেও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ তাছাড়া এবারের বিধানসভা নির্বাচন এক জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিরি মধ্যে হচ্ছে৷ যেখানে রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা অনেকটাই অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে রয়েছে সেখানে জঙ্গীদের তৎপরতা স্বাভাবিক ভাবেই জনমনে ভীতির সঞ্চার করছে৷
এদিকে, পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে৷ বিশেষ করে গন্ডাছড়া, ছাওমনু, কাঞ্চনপুর, দশদা, সিধাইয়ের কিছু এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হয়েছে৷ পাশাপাশি বড়মুড়া ও আঠারমুড়া পাহাড়ে যেসব ক্যাম্প রয়েছে সেগুলিতে অতিরিক্ত সংখ্যায় টিএসআর জওয়ান মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে আরক্ষা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে৷ পাশাপাশি রেল লাইনেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে৷ যাত্রীদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্সকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে৷
সামনের দিনগুলিতে রাজ্যে জঙ্গী নাশকতার আশঙ্কা প্রবল ভাবে বেড়ে যাওয়ায় পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কর্মীদের আরও বেশী সক্রিয় থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ সেই সাথে সীমান্ত এলাকায় যেখানে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়নি সেসব এলাকায় বিএসএফকে নজরদারী জোরদার করতে বলা হয়েছে৷
2017-10-04