নিজস্ব প্রতিনিধি, চুরাইবাড়ি, ৭ সেপ্ঢেম্বর৷৷ ১১ হাজার কেভি বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মারের আর্থিংয়ে লেগে দুটি গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে৷ গরু দুটিকে বাঁচাতে গিয়ে বিদ্যুতের সংস্পর্ষে গুরুতরভাবে আহত হন এক মহিলা৷ এই ঘটনায় এলাকা জুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে৷ ঘটনা উত্তর জেলার কদমতলা থানাধীন ত্রিপুরা-বাংলাদেশ সীমান্ত ইয়াকুব নগরের বিষ্ণুপুর গ্রামে৷ বিষ্ণুপুর গ্রামের ৪নং ওয়ার্ডের ১৬৬ নং বি এস এফ ক্যাম্পের পাশে সংঘটিত হয়েছে এই অঘটন৷ ৪নং ওয়ার্ডের ফরিদ মিয়া প্রতিদিনের মত নিজের দুটি গরু ঘাস খাওয়ার জন্য সকাল বেলা ছেড়ে দেন৷ বাড়ীর পেছনের বিএসএফ ক্যাম্পের পাশে ১১ হাজার কেভি বিদ্যুতের একটি ট্রান্সফর্মারের আর্থিংয়ে সংস্পর্শে আসতেই ঐ দুটি গবাদি পশু ছটফট করতে থাকে৷ তখন গৃহস্বামী ফরিদ মিয়া বাড়িতে ছিলেন না৷ তাই তার স্ত্রী নাজমা বেগম(৩৮) ঘটনাটি দেখতে পেয়ে বাঁচানোর জন্য দৌড় দেন৷ ঘটনাস্থলে যাবার সময় ট্রান্সফর্মার থেকে প্রায় ৮/১০ হাত দূরে থাকা বিএসএফ ক্যাম্প এর ফেন্সিং তারে নাজমার হাত লেগে ছিটকে পড়েন মাটিতে৷ সাথে সাথে পরিবারের অন্যান্য লোকজন চিৎকার চেচামেচি করলে ছুটে আসেন গ্রামবাসী৷ খবর দেওয়া হয় প্রেমতলা দমকল বাহিনী ও কদমতলা থানাকে৷ ঘটনাস্থলে ছুটে যায় কদমতলা থানার পুলিশ ও দমকল বাহিনী৷ অচৈতন্য অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে নাজমা বেগমকে ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ বর্তমানে গুরুতর আহত নাজমা বেগমের চিকিৎসা চলছে জেলা হাসপাতালে৷ অপরদিকে ঘটনাস্থলে ছুটে এসেছেন ধর্মনগর বিদ্যুৎ মহকুমা দপ্তরের সিনিয়র ম্যানেজার শঙ্কর চৌধুরী৷ সিনিয়র ম্যানেজার ঘটনাস্থলে এসে সরজমিনে তদন্ত করে মৃত গরু দুটির মালিক ফরিদ মিয়ার কাছ থেকে একটি লিখিত অভিযোগপত্র নেন এবং দুটি গরুর ছবি তুলে নিয়ে যান৷ পুলিশ প্রশাসন খবর দেয় কদমতলা পশু হাসপাতালে৷ পশু চিকিৎসক শুভন রায় ঘটনাস্থলে এসে ময়না তদন্ত করেন৷
এদিকে, এলাকাবাসী বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীদের উপর ক্ষোব্ধ হয়ে পড়েন৷ গবাদি পশু দুটির মালিক ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীদের খাম খেয়ালিপনায় এই দূর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে৷ এলাকাবাসীর তরফ থেকে অনেকবার জানানো হয়েছে এই ট্রান্সফর্মারের নিচে একটি বেড়া দেওয়ার জন্য৷ কিন্তু দপ্তর সে বিষয়ে কোন কর্ণপাত করেনি৷ তাই আজ এত বড় দূর্ঘটনা ঘটেছে৷ পাশাপাশি ফরিদ মিয়া জানান, গবাদি পশু দুটির মূল্য প্রায় ৭০ হাজার টাকা হবে৷ এদিকে, তার স্ত্রীও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন৷ তাই তিনি ও এলাকাবাসী ক্ষতিপূরণের দাবী তুলেছেন বিদ্যুৎ দপ্তরের কাছে৷ অন্যদিকে, ধর্মনগর বিদ্যুৎ জেলা দপ্তরের সিনিয়র ম্যানেজার শঙ্কর চৌধুরী জানান, তিনি এই ঘটনায় প্রয়োজনীয় সমস্ত রকমের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন৷ সেগুলি আগরতলা বিদ্যুৎ নিগমের মুখ্য কার্যালয়ে পাঠাবেন৷ নিগম যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই তিনি পালন করবেন৷ ক্ষতিপূরণ কত দেওয়া হবে সে ব্যাপারে তিনি স্পষ্ট কিছু বলতে পারবেন না বলেও জানান৷
2017-09-08