রাজ্য সরকারের নীরবতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আমরণ অনশন ষষ্ঠ দিন অতিক্রান্ত, পদক্ষেপ নেবেন রাজ্যপাল

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ০৬ আগস্ট৷৷ রাজ্যের সর্ব-শিক্ষা শিক্ষক সংগঠনের অনশন আন্দোলনের আজ ষষ্ঠ দিন৷ আজও আন্দোলন অটুট রয়েছে৷ পাশাপাশি রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সংগঠন এবং রাজের শুভবুুদ্ধি ব্যক্তিবর্গের সমর্থনও বেরে চলছে৷ রাজ্যে সর্বশিক্ষার শিক্ষকদের একাংশের আমরণ অনশন চলছে৷ রাজ্যপাল তথাগত রায় অনশনকারীদের স্বাস্থ্যের অবনতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷ রাজ্যপাল অনশনরত শিক্ষকদের শারীরিক অবস্থা ও তাদের দাবিদাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছ থেকে অবগত হয়েছেন৷ রাজ্যপাল বর্তমানে নিজের চিকিৎসার জন্য কলকাতায় অবস্থান করছেন৷ এরই মধ্যে রাজ্যে ফিরে এসে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন৷ আজ রাজভবন সচিবালয় থেকে এই সংবাদ জানানো হয়েছে৷
অনশনের ষষ্ঠ দিনে সর্ব-শিক্ষার শিক্ষদের দাবীর প্রতি রাজ্য সরকারের নীরবতার পাশাপাশি আন্দোলনও অনড় রাখার ভূমিকায় রয়েছে সংগঠন৷ শুক্রবার রাতে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সর্ব-শিক্ষার সংগঠনের সম্পাদক বাস্তব দেববর্র্ম৷ তিনি হাসপাতাল থেকে ফিরে পুনরায় অনশনে বসেছেন৷ শনিবার গভীর রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে আরও ৫ জনের৷ তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ এছাড়া আরও ২৪ জনের মত অনশনকারী শিক্ষক অসুস্থ হয়ে মঞ্চে রয়েছেন৷ রাজ্যের দাবী আদায়ের আন্দোলনে একসাথে এত বেশী সংখ্যক অনশনকারীর সংখ্যা এক নজির সৃষ্টি করেছে বলে মনে হচ্ছে৷ রাজ্য সরকার ও রাজ্যবাসীর নিকট সর্ব-শিক্ষা শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকে তাদের দাবীর সমর্থনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে৷ ইতিমধ্যে ৬ জন জিবি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন৷ যদিও রাজ্যে সরকারের পক্ষ থেকে অনশন প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য আর আন্দোলনকারীদের সাথে যোগাযোগ করা হয়নি৷ অন্যদিকে নিয়মিত করণের দাবী রাজ্য সরকার পূরণ করলে তবেই আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবে বলে রাজ্য সরকারকে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়া হয়েছে ত্রিপুরা এসএসএ টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েনের পক্ষ থেকে৷
ওরিয়েন্ট চৌমূহনীতে ১ আগস্ট মঙ্গলবার থেকে এই আন্দোলন শুরু হয়েছে৷ এর আগে সর্ব-শিক্ষার শিক্ষকরা গত ২৪ জুলাই বিদ্যালয় শিক্ষা অধিকর্তার কার্যালয়ে ডেপুটেশনে গিয়ে চরম সময়সীমা বেঁধে দিয়ে এসেছিলেন৷ এই সময়ের মধ্যে নিয়মিত করা না হলে ১ আগস্ট আমরণ অনশন করা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন শিক্ষকরা৷ যথারীতি সেই ঘোষণা অনুযায়ী সেইদিন থেকেই অনশন শুরু হয়েছে৷ প্রথম দিনে অনশন মঞ্চে গিয়েএই আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এসছিলেন কংগ্রেস সভাপতি বীরজীত সিনহা, চতুর্থ দিনে গিয়েছিলেন বিজেপি সভাপতি বিপ্লব দেব, পর্যবেক্ষক সুনীল দেওধর ও কংগ্রেস বিধায়ক রতন লাল নাথ৷ পঞ্চম দিনে গেলেন আইপিএফটির এনসি দেববর্র্ম৷ আজ ষষ্ঠ দিনে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছেনা৷ অনশন স্থল জুড়ে ভিড় বাড়ছে মুখ্যমন্ত্রী এই ইস্যুতে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি৷ এই পরিস্থিতিতে এক্ষেত্রেও রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ জরুরি হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল৷ উল্লেখ্য, ত্রিপুরাতে সর্ব-শিক্ষার অধীনে ৫১০০ জন শিক্ষক রয়েছেন৷ শুক্রবার রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দুইজন আধিকারিককে অনশন মঞ্চে পাঠানো হয়েছিল৷ তাদের সরকারি তরফে বোঝানো হলেও কেও সরকারের আহ্বানে সাড়া দেননি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *