নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৫ আগষ্ট৷৷ ত্রিপুরা সর্বশিক্ষা অভিযানে নিযুক্ত শিক্ষকদের সংগঠন টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের আমরণ অনশন আজ পঞ্চম দিনে পড়ল৷ অনশনে বসা আন্দোলনকারী এবং সরকার পক্ষ উভয়ই নিজেদের অবস্থানে দৃঢ় রয়েছে৷ ফলে পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি ঘটছে৷ রাতেই অনশন মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়েন সংগঠনের সাধারন সম্পাদক বাস্তব দেববর্মা৷ জানা গেছে তাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে৷ তিনি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন৷ মধ্য রাতে খবর পেয়ে শুনে ছুটে আসেন এসডিএম শমিত রায় চৌধুরী ও পুলিশের আধিকারিকরা৷ পরে আন্দোলনকারীদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ৷ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় সংগঠনের সম্পাদকের সুস্থ থাকা অবশ্যক৷ তাই তাকে হাসপাতালে যেতেই হবে৷ কিন্তু বাকি কেউই যাবেন না৷ মরতে হলে রাজপথের ধারে এই অনশন মঞ্চেই মরবেন বলেও এসডিএমকে জানিয়ে দেওয়া হয়৷ অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে তারা বাস্তব দেববর্মাকে আইজিএম হাসপাতালে নিয়ে যান এসডিএম শমিত রায় চৌধুরী নিজে৷ এই মঞ্চে আরও কয়েকজন অসুস্থ আছেন৷ সকালে আরও বেশ কয়েক জনের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে৷ চিকিৎসকরা এসে তাদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে বলেন৷ কিন্তু তারা রাজি হন নি৷ চিকিৎসকরা জানিয়েছে, প্রচন্ড গরম, আর রাজপথের ধারে এভাবে কতদিন তারা অনশন চালিয়ে যেতে পারবেন, তাতে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে৷ অনেকেরই ডিহাইড্রেশন হচ্ছে৷ ঘনঘন অনশনকারী কয়েক জনের মতিভ্রমও হচ্ছে৷ এসব ভাল লক্ষণ নয়৷ এই ইস্যুতে দুপক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে বলছে ও উভয় পক্ষই সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে৷
এদিকে, সর্ব-শিক্ষা শিক্ষকদের নিয়ে রাজ্য সরকার নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছে৷ অন্য দিকে টানা অনশনে অসুস্থ হয়ে পরাদের সঙ্গে নতুন করে আরও শিক্ষক অনশনে বসবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন৷ শিক্ষামন্ত্রী তপন চক্রবর্তী সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে বলেন, নতুন করে সরকারের বাবনা চিন্তা করার কিছুই নেই৷ যদিও তিনি অনশনকারীদের উদ্দেশ্যে আহ্বান রেখেছেন, তারা যাতে অনশন প্রত্যাহার করে নেয়৷ তবে পাল্টা বিজেপিকে আগ্রমণ শানাতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, আপনারা ক্ষমতায় ফিরলে সর্ব-শিক্ষার শিক্ষকদের নিয়মিত করবেন বলছেন৷ যদি তাই হয় তবে দিল্লিতে তো আপনাদেরি সরকার রয়েছে৷ কেন জাতীয় স্তরে এ নিয়ে অভিন্ন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না? শিক্ষামন্ত্রী বলেন সর্ব-শিক্ষার শিক্ষকরা যাতে অনশন প্রত্যাহার করে নেয় তার জন্য শিক্ষা দফতরের দুইজন আধিকারকিকে অনশন স্থলে পাঠানো হয়েছিল৷ কিন্তু কি আলোচনা হয়েছে সে ব্যাপারে কিছু বলতে পারি না৷ যদিও আধিকারিক এখান থেকে চলে যাবার পর সর্ব শিক্ষার শিক্ষকরা স্পষ্টতই ঘোষণা করে জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্য সরকারের এই অনুরোধ তারা মানছেন না এবং যে কোনও মূল্যে অনশন আন্দোলন চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন৷ এইদিকে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন উদ্ভুত পরিস্থিতি সম্পর্কে বিষয়টি কেন্দ্রের সরকারের নজরে নেওয়া হবে৷
2017-08-06