জয়নগরে বেআইনী মজুত ওষুধ ও কফ সিরাপ বাজেয়াপ্ত, বাজারমূল্য প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ টাকা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১১ জুলাই৷৷ রাজধানী আগরতলায় জয়নগর এলাকা থেকে প্রচুর নেশাদ্রব্য হিসেবে ব্যবহৃত কফ

জয়নগরে উদ্ধার করা হয়েছে বিস্তর পরিমাণে নেশা জাতীয় সামগ্রী৷ ছবি নিজস্ব৷

সিরাপ উদ্ধার হয়েছে৷ মঙ্গলবার গোপন সূত্রের খবরের ভিত্তিতে বিএসএফ ১৯৫ নং ব্যাটেলিয়ানের জওয়ানরা এবং পুলিশ ও ড্রাগ কন্ট্রোলার আধিকারীকরা জয়নগরে চন্দন দত্তের গোদাম থেকে ২৫৭২৪ বোতল নেশাদ্রব্য হিসেবে ব্যবহৃত কফ সিরাপ যার বাজার মূল্য ২৪ লক্ষ ৯২ হাজার ৬৪০ টাকা এবং আরো ২৭ লক্ষ ১৮ হাজার ৬৯০ টাকা মূল্যের অন্য ওষুধ বাজেয়াপ্ত করেছে৷ এই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার সম্ভব হয়নি৷ তবে, চন্দন দত্তের বিরুদ্ধে ড্রাগস এন্ড কসমেটিক্স অ্যাক্ট মোতাবেক মামলা রুজু করা হয়েছে৷
জানা গেছে, জয়নগরে দেবাশিষ রায়চৌধুরীর বাড়িতে বাসন্তী ফার্মাসিউটিক্যালস হোলসেল মেডিসিন ডিস্ট্রিবিউটারের ব্যবসা করতেন চন্দন দত্ত৷ এই ব্যবসার আড়ালে অবৈধ নেশাদ্রব্য পাচার হচ্ছে বলে গোয়েন্দাদের কাছ থেকে খবর পায় বিএসএফ৷ এই খবরের ভিত্তিতে এদিন বেলা সাড়ে বারটা নাগাদ পশ্চিম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী ও বিশাল পুলিশ বাহিনী সহ ড্রাগ কন্ট্রোলার আধিকারীকদের বিএসএফ ১৯৫ নং ব্যাটেলিয়ানের জওয়ানরা জয়নগরে দেবাশিষ রায়চৌধুরীর বাড়িতে হানা দেয়৷ সেখানে ভাড়াটিয়া ওষুধ ব্যবসায়ী চন্দন দত্তের মজুত রাখা আরসি কফ সিরাপ প্লাস ১৫২১২ বোতল যার বাজার মূল্য ১৭ লক্ষ ৩৫ হাজার ৭৭৬ টাকা এবং আরসি কফ সিরাপ ডিএক্স ১০৫১২ বোতল যার বাজার মূল্য ৭ লক্ষ ৫৬ হাজার ৮৬৪ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়৷ সাথে ২৭ লক্ষ ১৮ হাজার ৬৯০ টাকা মূল্যের বিভিন্ন ধরনের ওষুধও সেখান থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়৷ ড্রাগ কন্ট্রোলার আধিকারীক জানিয়েছেন, কফ সিরাপগুলি নিষিদ্ধ ওষুধ নয়৷ তবে, এই কফ সিরাপগুলি বিক্রির ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা আছে৷ কারণ, এই কফ সিরাপগুলি নেশাদ্রব্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে৷ তাই, সকলের কাছে তা বিক্রি করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা আছে৷ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই কফ সিরাপ ব্যবহার করা আইনত বৈধ নয়৷ তিনি বলেন, চন্দন দত্তের ব্যক্তিগত ড্রাগ লাইসেন্স রয়েছে৷ যেখান থেকে কফ সিরাপগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সেখানে মজুত রাখার কোন বৈধ অনুমোদন তাঁর কাছে নেই৷ তাছাড়া, অনুমোদিত রিটেল ওষুধ বিক্রেতাদের কাছে ঐ কফ সিরাপ বিক্রি করার কোন কাগজপত্রও পাওয়া যায়নি৷ এর থেকেই সন্দেহ হচ্ছে যে, বেআইনীভাবে কফ সিরাপ বিক্রি করা হচ্ছে৷ কারণ, কফ সিরাপগুলি গোপনভাবে এই জায়গায় মজুত রাখা হয়েছিল৷ তিনি জানান, কোথা থেকে কফ সিরাপগুলি কেনা হয়েছে এবং কাদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখা হবে৷ কফ সিরাপ বেআইনী মজুত রাখার জন্য কড়া ব্যবস্থাও নেওয়া হবে৷ তিনি জানিয়েছেন, এসংক্রান্ত একটি রিপোর্ট ড্রাগ কন্ট্রোল অথরিটির কাছে জমা দেওয়া হবে৷ এরপরই চন্দনবাবুর বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে৷ তিনি আরো জানান, কফ সিরাপের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ওষুধও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে৷ ঐ ওষুধগুলি বিক্রির ক্ষেত্রেও বৈধ অনুমোদন রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *