টিএমসিতে ডাক্তারী পড়ুয়াদের বোকা বানাচ্ছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী, অভিযোগ দেওধরের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২ জুলাই৷৷ রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাদল চৌধুরী ডাক্তারী পড়ুয়াদের বোকা বানাচ্ছেন বলে গুরুতর অভিযোগ করলেন বিজেপি রাজ্য প্রভারী সুনীল দেওধর৷ তাঁর অভিযোগ, ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে রাজ্য সরকার দ্বিচারিতা করছে৷ এই কলেজকে দিল্লীতে এমসিআই’র কাছে সরকারী কলেজ বলে প্রচার চালাচ্ছে, অন্যদিকে ডাক্তারী পড়ুয়াদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ফী হিসেবে আদায় করছে বেসরকারী কলেজ বলে৷

রবিবার আগরতলায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে শ্রীদেওধর জানান, হাপানিয়াস্থিত ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজকে যে অনুমোদন মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া তথা এমসিআই দিয়েছিল তার মেয়াদ ২০১৬ সালে শেষ হয়ে গিয়েছে৷ তারপর কোন অনুমোদন নেই এই মেডিক্যাল কলেজের৷ কিন্তু, তারপরও প্রতিবছর ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে ৬ লক্ষ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে বেসরকারী কলেজ ঘোষণা দিয়ে৷  যদিও রাজ্য সরকার এই কলেজকে সরকারী কলেজ হিসেবেই মান্যতা দিচ্ছে৷

তিনি জানান, এই মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে একটি চিঠি তিনি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নাড্ডাকে দিয়েছেন৷ চিঠিতে তিনি ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের অনিয়মের বিষয়গুলি খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ করেছেন৷ শ্রীদেওধর অভিযোগ করেন, রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাদল চৌধুরী তাঁর এই চিঠিকে নিয়ে অপপ্রচার করছেন৷ মিথ্য তথ্য তুলে ধরছেন শ্রীচৌধুরী৷ এই প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য প্রভারী জানান, সম্প্রতি তিনি টিএমসির ওয়েবসাইটে দেখেছেন যে এই কলেজের এমসিআই অনুমোদন ২০১৬ সাল পর্যন্ত ছিল৷ এদিকে, শ্রীদেওধরের সাংবাদিক সম্মেলনের পরপরই টিএমসির ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা গিয়েছে যে স্থানে এমসিআই অনুমোদন সংক্রান্ত বিষয়টি থাকার কথা সেখান থেকে যাবতীয় তথ্য সরিয়ে দেওয়া হয়েছে৷

অন্যদিকে, বিজেপি রাজ্য প্রভারী অভিযোগ করেছেন, এই মেডিক্যাল কলেজের অনেক ডাক্তারকে নিযুক্ত করা হয়েছে যারা নিয়মিত কলেজে যান না৷ তাঁরা বহির্রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে কর্তব্যরত৷ এখানে বড় ধরনের ঘোটালা রয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন৷ তাছাড়া, রাজ্য সরকার এই কলেজটি পরিচালনার জন্য যে সোসাইটি গঠন করেছে তার আগে জি-নেট নামক একটি প্রতারক সংস্থার কাছে পিপিপি মডেলে কলেজ চালু করার দায়িত্ব দিয়েছিল৷ ঐ সংস্থাটি রাজ্য সরকারকে জামিনদার রেখে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে রাজ্য থেকে পালিয়ে যায়৷ পরবর্তী সময়ে রাজ্য সরকার ঐ ঋণের টাকা ফেরত দিয়েছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে৷ শ্রীদেওধর অভিযোগ করেছেন, এই টাকা রাজ্যের জনগণের৷ প্রতারণার শিকার হয়ে রাজ্য সরকার জনগণের টাকায় ঋণ মিটিয়েছে৷ এদিকে, প্রতারক সংস্থাটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নামকাওয়াস্তে মামলা করা হয়েছে৷ কিন্তু, আজ পর্যন্ত তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না কেন? এই প্রসঙ্গে তিনি শাসক দলের ভূমিকায় যথেষ্ট সন্দেহ প্রকাশ করেছেন৷

প্রসঙ্গক্রমে বিজেপি রাজ্য প্রভারী সুনীল দেওধর জানিয়েছে, আসন্না রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কংগ্রেসের এক বিধায়ক এনডিএ মনোনীত বিজেপি প্রার্থী রামনাথ কোবিন্দকে ভোট দেবেন৷ তৃণমূলের বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণকে রাজ্য সফরকালে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা রাম মাধব ফোন করে আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য৷ শ্রীদেওধর আরও জানান, তৃণমূলের কোন বিধায়কের সাথে রাম মাধবের কোন বৈঠক হয়নি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *