নিজস্ব প্রতিনিধি, উদয়পুর, ১২ জুন৷৷ দূর্নীতি যেন রাজ্য সরকারের পিছু ছাড়ছেনা৷ প্রকৃতদের বঞ্চিত করে পেছনের দরজা দিয়ে শাসক দলের কাছের লোকদের কনস্টেবল পদে চাকুরী পাইয়ে দেবার অভিযোগ উঠেছিল অনেক আগে থেকেই৷ আজ হাইকোর্টের রায়ে আবারো তা প্রমাণিত হল৷ বলা বাহূল্য, ২০১০ সালের আগস্ট মাসের বিজ্ঞাপন মূলে ত্রিপুরা পুলিশের কনস্টেবল পদে ১০৭৬ জনকে নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়৷ তার মধ্যে কনস্টেবল পুরুষ পদের জন্য তপশিলী জাতি ১৭৪ জন, তপশিলী উপজাতি ৩০৩ জন এবং ৫৯৯টি সাধারন প্রার্থীর জন্য শূণ্যপদ৷ রাজ্যের বিভিন্ন মহকুমায় কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য র্যালী শুরু হলে ঐ র্যালীতে অন্যান্যদের মতো উদয়পুর মহকুমার অন্তর্গত খুপিলং গ্রামের সংখ্যালঘু যুবক জাকির মিঞাও অংশ নেয়৷ শারীরিক ও লিখিত পরীক্ষায় সফলতার সহিত উত্তীর্ণ হলেও ২০১২ সালের সেপ্ঢেম্বর মাসে আরক্ষা দপ্তরের কনস্টেবেল পদের ভাগ্যবানদের তালিকায় স্থান দখল করে নিতে পারেনি জাকির৷ সমস্ত পরীক্ষা কৃতিত্বের সাথে সফল হলেও কেন চাকুরী পেলনা ঐ যুবক তা নিয়ে প্রশ্ণ উঠে৷ অবশেষে ২০১৫ সালের ২৬ শে সেপ্ঢেম্বর তথ্য জানার অধিকার আইন মোতাবেক আবেদন করলে দপ্তরের আধিকারিক প্রদীপ পাল তাকে চিঠি দিয়ে জানান যে, ঐ বঞ্চিত সংখ্যালঘু বেকার যুবক লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় ১০০ নাম্বারের মধ্যে ষাট নম্বর পেয়েছে৷ চাকুরী প্রাপ্ত ৫৮১ জন সাধারন প্রার্থীদের মধ্যে ২৮ জন পেয়েছে সাড়ে ষাট নম্বর৷ অর্থাৎ হাফ নম্বরের জন্য ঐ প্রার্থী চাকুরী থেকে বঞ্চিত হয়েছেন৷ তারপরে লিখিত পরীক্ষার খাতা পূনর্মূল্যায়ান করার আবেদন করেন ঐ বঞ্চিত যুবক৷ কিন্তু কোনো সুদোত্তর না পাওয়াতে দীর্ঘ তালবাহানার পর বঞ্চিত ঐ বেকার যুবক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন৷ হাইকোর্ট খাতা পুনর্মূল্যায়েনের জন্য আইপিএস অরিন্দম নাথকে নির্দেশ দেন৷ অরিন্দম নাথ খাতা পুনর্মূল্যায়ন করে আদালতে জমা দিলে দেখা যায় জাকির মিঞার লিখিত পরীক্ষার নম্বর আরো ২ বেড়ে যায়৷ অর্থাৎ জাকির মিঞার প্রাপ্ত নম্বর গিয়ে দাঁড়ায় ৬২৷ অর্থাৎ প্রথমে তাকে ইচ্ছাকৃত ভাবে বঞ্চিত করে রাখে স্বরাষ্ট্র দপ্তর চাকুরী থেকে৷ সোমবার উচ্চ আদালতের মাননীয় বিচারপতি শুভাশিষ তলাপাত্র ঐ বঞ্চিত সংখ্যালঘু বেকার যুবক জাকির মিঞাকে ৩ মাসের মধ্যে ত্রিপুরা পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগের নির্দেশ দেন৷ আবেদনকারীর পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন বরিষ্ট আইনজীবি পুরুষোত্তম রায় বর্মন, সঙ্গে ছিলেন তরুন আইনজীবি কৌশিক নাথ, সমরজিৎ ভট্টাচার্য্য ও প্রদ্যুৎ মৈশান প্রমুখ৷
2017-06-13