নিজস্ব প্রতিনিধি, চুড়াইবাড়ি, ৩ জুন৷৷ বজ্রপাতে আরও এক যুবকের মৃত্যু৷ দূর্ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার বিকাল চারটা নাগাদ

উত্তর জেলার শনিছড়ার লক্ষ্মীনগরের তিন নং ওয়ার্ডে৷ নিহত যুবকের নাম সুরজিৎ গৌর৷ বয়স উনিশ৷ জানা গিয়েছে এদিন বিকালে বাড়ির ঘরের বারান্দায় বসে আম খাচ্ছিল৷ তখন প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছিল৷ হঠাৎ একটি বিকট শব্দে বজ্রপাত হয়৷ বারান্দায় থাকা একটি কুকুর পালিয়ে যায়৷ কিন্তু সুরজিৎ কিছু বোঝার আগেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে৷ ঘরে থাকা বাবা, মা, ভাই সবাই দৌঁড়ে এসে তাকে ধরে৷ সাথে সাথে খবর দেওয়া হয় প্রেমতলা ফায়ার স্টেশনে৷ সেখান থেকে দমকল কর্মীরা গিয়ে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সুরজিৎকে উদ্ধার করে কদমতলা হাসপাতালে নিয়ে যায়৷ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানায় হাসপাতালে আনার আগেই সুরজিতের মৃত্যু হয়েছে৷ ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছে কদমতলা থানার পুলিশ৷ সুরজিতের মর্মান্তিক মৃত্যুতে গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে৷
এদিকে, টানা ঝড়-বৃষ্টিতে উত্তর জেলার জনজীবন বিপর্য্যস্ত হয়ে পড়েছে৷ গত মঙ্গলবার থেকে বরুণ দেবতার কুদৃষ্টি গোটা রাজ্যের উপর৷ ফলে ঘর থেকে বের হওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে৷ কোন কোন স্থানে জলপ্লাবন৷ আবার কোথাও ভূমিস্খলন হচ্ছে৷ আবার কখনও জাতীয় সড়কের ওপর গাছ ভেঙ্গে পড়ে যান চলাচল ব্যহত হচ্ছে৷ প্রকৃতি যেন তান্ডব সৃষ্টি করেছে গোটা উত্তর জেলায়৷
চুড়াইবাড়ি সেইলটেক্স কমপ্লেক্সের পাশে একটি চায়ের দোকানের উপর প্রকান্ড একটি গাছ ভেঙ্গে পড়ে৷ দুমড়ে মুচড়ে যায় দোকনঘরটি৷ ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দুপুর দুইটা নাগাদ৷ প্রবল বৃষ্টি ও তুফানের কারণে চুড়াইবাড়িস্থিত বন দপ্তরের একটি অতি পুরনো গাছ জাতীয় সড়কের উপর পড়ে যায়৷ মূলট মাটি ধসের ফলেই গাছটি পড়ে যায়৷ গাছটি পড়েছে জাতীয় সড়কের পাশে একটি চায়ের দোকানে৷ দোকানের মালিক এক হতদরিদ্র মহিলা৷ তার নাম সুপ্তা দেব৷ অল্পের জন্য তিনি প্রাণে বাঁচেন৷ গাছটি পড়ে যাওয়ায় জাতীয় সড়কের যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে পড়ে৷ পরবর্তী সময়ে চুড়াইবাড়ি বন দপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছটি কেটে রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক করেছেন৷ এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত চায়ের দোকানের মালিক সুপ্তা দেব জানন, কিছুদিন আগে দোকানের পেছনের দিকে একটি পুরনো বড় গাছের ডালপালা ভেঙ্গে পড়েছিল একটি বাড়ির ঘরের উপর৷ তখন স্থানীয় জনগণ বন দপ্তরের অফিসে গিয়ে আর্জি জানিয়েছিলেন যাতে গাছটি কেটে ফেলা হয়৷ তা না হলে যেকোন সময় বড় ধরনের বিপত্তি হতে পারে৷ কিন্তু বন দপ্তরের কর্মীরা তাতে কোন সাড়া দেয়নি৷ তাই এদিন গাছটি পড়ে গিয়ে দোকানঘরটি চুরমার হয়ে যায়৷ এনিয়ে জনমনে বন দপ্তরের ভূমিকায় চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে৷
এদিকে, আমবাসা-গন্ডাছড়া সড়কে একটি বড় গাছ ভেঙ্গে পড়েছে৷ তাতেও সেখানে যান চলাচল বিঘ্নিত হয়েছে৷ বহু যানবাহন আটকা পড়ে যায়৷ পরবর্তী সময়ে কাছাকাছি এলাকার সিআরপিএফ ক্যাম্পের জওয়ানরা ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছটি কেটে রাস্তা পরিস্কার করে দিলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে৷