নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৯ মে৷৷ শ্রদ্ধায় স্মরণে পালিত হল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী৷ সকালে পুর নিগমের ৩২ নং ওয়ার্ডের উদ্যোগে বের হয় প্রভাত ফেরি৷ রাজ্যের অন্যান্য স্থানেও এদিন প্রভাত ফেরি বের হয়েছে৷ আগরতলায় রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবন প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাংসৃকতিক অনুষ্ঠান৷
এদিকে মঙ্গলবার সকালে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ২নং হলে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে শ্রদ্ধার সাথে কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম জয়ন্তী উদযাপন করা হয়৷ অনুষ্ঠান শুরুতে শিক্ষামন্ত্রী তপন চক্রবর্তী, তথ্য ও সংসৃকতি মন্ত্রী ভানুলাল সাহা, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র ড প্রফুল্লজিৎ সিনহা সহ বিশিষ্টজনেরা রবীন্দ্র প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান৷ অনুষ্ঠানের উদ্বোধক শিক্ষা মন্ত্রী তপন চক্রবর্তী বর্তমান প্রজন্মকে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আদর্শকে অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ ছিলেন এক বিরল প্রতিভার অধিকারী৷ তাঁর স্বপ্ণ ছিল দেশ হবে সকলের৷ যেখানে, জাত, পাত, ধর্ম, বর্ণ সম্প্রদায় থাকবে না৷ থাকবে সকলের সমান অধিকার৷ তাই রাজ্য স রকার রবীন্দ্রনাথকে রাজ্যের প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবার উদ্যোগ নিয়েছে৷ তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ ছিলেন মানব দরদি ও দেশপ্রেমিক৷ তিনি তাঁর কবিতায়, গল্পে, সাহিত্যে গানে সমাজের অবহেলিত, দলিত, গরিব, অসহায়দের কথা লিখে গেছেন৷
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আজও দেশে ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায়ের নামে অনৈক্য, বিভেদ ও অসহিষ্ণুতা সৃষ্টি করা হচ্ছে৷ আজ এর থেকে উত্তোরণের জন্য আমাদের কাছে রবীন্দ্রনাথ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক৷ বর্তমান প্রজন্মকে তার পথ অনুসরণ করতে হবে৷
প্রধান অতিথির ভাষণে তথ্য ও সংসৃকতিমন্ত্রী ভানুলাল সাহা বলেন, রবীন্দ্রনাথ চিরন্তন৷ আজ রবীন্দ্র কানেন প্রভাতী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানের সূচনা করেছি৷ এতে সহস্রাধিক কচিকাঁচা,নাচে, গানে অংশ নিয়েছে৷ তিনি বলেন, বিবিধের মাঝে মিলন মহান — এই স্বপ্ণই রবীন্দ্রনাথ দেখেছিলেন৷ আমরাও চাই রবীন্দ্র চর্চার মধ্য দিয়ে দেশের অসহিষ্ণুতা , অনৈক্য, বিভেদ দূর ক রতে৷ রবীন্দ্রনাথের চিন্তা ও আদর্শ আমরা যদি গ্রহণ না করি তবে পরস্পরের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও বিদ্বেষ লেগেই থাকবে৷ তাই রবীন্দ্রনাথের আদর্শকে আমাদের গ্রহণ করতে হবে৷ সম্মানিত অতিথির ভাষণে আগরতলা পুর নিগমের মেয়র ড প্রফুল্লজিৎ সিনহা বলেন, রবীন্দ্রনাথের প্রাসঙ্গিকতা আজকের দিনে অনেক বেশি৷ তাকে সঠিক ভাবে জানি না বলেই আজ ধর্মের নামে বর্ণের নামে বিভেদ সৃষ্টি হচ্ছে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন৷ এছাড়া, বক্তব্য রাখেন উচ্চশিক্ষা অধিকর্তা ড বিপ্রদাস পালিত, রাজ্য শিক্ষা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ পর্ষদের অধিকর্তা রতিশ মজুমদার, রবীন্দ্র গবেষক সুবিমল রায়, বিশিষ্ট ককবরক লেখক নরেশ চন্দ্র দেববর্মা প্রমুখ৷ অনুষ্ঠানে সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য এবছর রবীন্দ্র পুরস্কার ২০১৭ তে ভূষিত করা হয় যথাক্রমে রবীন্দ্র গবেষক সুবিমল রায় ও ককবরক লেখক নরেশ চন্দ্র দেববর্মাকে৷ মন্ত্রী তপন চক্রবর্তী ও মন্ত্রী ভানুলাল সাহা তাদের প্রত্যেকের হাতে শাল, মানপত্র বই ও ১৫০০০ টাকার চেক তুলে দেন৷ স্বাগত ভাষণ দেন বুনিয়াদী শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা কুন্তল দাস৷ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা বর্ণময় সাংসৃকতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন৷ সভাপতিত্ব করেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অধিকর্তা উত্তম কুমার চাকমা৷
2017-05-10