নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ নভেম্বর৷৷ ব্লকের দুর্নীতির সিবিআই তদন্তের দাবি খারিজ করে দিয়েছে উচচ আদালত৷ বুধবার ত্রিপুরা হাইকোর্টের মাননীয় মুখ্যবিচারপতি টি ভাইপেই এবং বিচারপতি শুভাশিস তলাপাত্রের ডিভিশন বেঞ্চ ব্লকের দুর্নীতি মামলায় রায় দিয়ে বলেন, ৮ মাসের মধ্যে সমস্ত ব্লকে চার্টার্ড একাউনটেন্ট দিয়ে অডিট করাতে হবে৷ সেই অডিট রিপোর্ট কম্পট্রলার এন্ড অডিটর জেনারেল(ক্যাগ)’র কাছে পাঠাতে হবে৷ পাশাপাশি বিধানসভাতেও এই রিপোর্ট পেশ করতে হবে৷ বিধানসভায় রিপোর্টটি পাশ হলে এই রিপোর্টটি পাবলিক ডকুমেন্ট হিসেবে প্রকাশ করতে হবে৷ উচ্চ আদালত এদিন রায় দিয়ে আরো বলেন, ক্যাগ যদি মনে করে অডিট রিপোর্টের ভিত্তিতে পুনরায় অডিট করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তাহলে তারা নিজেদের উদ্যোগে সেই পদক্ষেপ নিতে পারবে৷ শুধু তাই নয়, অডিট রিপোর্টে আবেদনকারীরা সন্তুষ্ট না হলে পুনরায় তাঁরা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হতে পারবেন৷
উল্লেখ্য, ২০০৮ সাল থেকে রাজ্যে বিভিন্ন ব্লকে শুরু হয়েছে রেগা প্রকল্পের কাজ৷ এছাড়াও রাজ্যে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প রয়েছে৷ কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা মোতাবেক যে কোনো প্রকল্পের অডিট করতেই হবে৷ কিন্তু ২০০৮ সাল থেকে রেগা প্রকল্পে কোন অডিট করা হয়নি৷ প্রদেশ কংগ্রেস বিশালগড়ে রেগা প্রকল্পে ৫০ কোটি টাকা দুর্নীতির ঘটনা সামনে আনে৷ এর জেরে বিশালগড়ের বিডিও বিমল চক্রবর্তীকে পুলিশ গ্রেপ্তারও করেছিল৷ পরবর্তী সময়ে অবশ্য বিমল চক্রবর্তী জামিনে মুক্তি পান৷ এদিকে, রূপাইছড়ি এবং সাতচাঁদ ব্লকের দুর্নীতির বিভিন্ন তথ্য কংগ্রেস একে একে প্রকাশ্যে আনে৷ এরপরই সিবিআই দাবি করে কংগ্রেসের তরফে উচ্চ আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়৷ বরিষ্ট আইনজীবী অরুণচন্দ্র ভৌমিকও ব্লক দুর্নীতির জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন উচ্চ আদালতে৷ দুটি মামলারই এদিন একসাথে চূড়ান্ত শুনানি হয়৷ শুনানি শেষে উচ্চ আদালতের মাননীয় মুখ্যবিচারপতি এই রায় দেন৷
এদিকে, রায় শুনে আবেদনকারী ডা অশোক সিনহা বলেন, আদালতের রায় মাথা পেতে নিচ্ছি৷ কিন্তু এই রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারলাম না৷ ডা সিনহার মতে, এই রায়ে রাজ্য সরকার কিছুটা স্বস্তি পাবে৷ তিনি দাবি করেন, রাজ্য সরকার দ্বারা পুনরায় ব্লকগুলির অডিট করানো হলেও কোন দুর্নীতিই সামনে আসবে না৷ বরং তা ধামাচাপা কি করে দেওয়া যায় সেই চেষ্টা হবে৷ আর এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টে আপিল করার সামর্থ্য নেই৷ তাই আদালত যে রায় দিয়েছে তা মেনে নিচ্ছি৷ বরিষ্ঠ আইনজীবী অরুণচন্দ্র ভৌমিক জানান, সমস্ত ব্লকের অডিট করার পর রিপোর্ট নিয়ে কোন আপত্তি থাকলে যেহেতু আদালত পুনরায় আপিল করার সুযোগ দিয়েছে তাই এখন অপেক্ষা করতেই হবে৷ সমস্ত ব্লকের নতুন করে অডিট রিপোর্ট হাতে আসার পর তখন পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে তিনি চিন্তা করবেন বলে জানিয়েছেন৷ এই মামলার রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বরিষ্ঠ আইনজীবী সন্দীপ দত্ত চৌধুরী বলেন, রাজ্য সরকার এতদিন ব্লকের অডিট প্রকাশ করেনি৷ এখন উচ্চ আদালতের নির্দেশে সেই রিপোর্টে বিধানসভায় পেশ করতে হবে৷
2016-11-17