রাজ্যগুলির উপর বিশ্বাস নেই কেন কেন্দ্রের জিএসটি কাউন্সিলে উঠেছে প্রশ্ণ ঃ অর্থমন্ত্রী

bhanu-lal-saha-ministerনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৫ নভেম্বর৷৷ পণ্য পরিষেবা কর (জিএসটি) চালু হলে সমান্তরালভাবে নাকি সরাসরি রাখা হবে নজরদারি, সেই প্রশ্ণে জট বেঁধেছে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে৷ রাজ্যগুলিকে বিশ্বাস করছে না কেন্দ্রীয় সরকার, তাতেই আপত্তি একজোটে৷ এজন্যই পণ্য পরিষেবা কর চালু করা নিয়ে মতানৈক্যের মধ্যে সমাপ্ত হয়েছে কাউন্সিলের বৈঠক, জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহা৷
শনিবার জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী জানান, কেন্দ্র রাজ্য গুলির উপর বিশ্বাস কেন রাখতে পারছে সেই তোলা হয়েছে৷ কারণ, আগে সমান্তরালভাবে কর সংগ্রহে নজরদারি রাখা হতো৷ এখন কেন্দ্র চাইছে সরাসরি নজরদারি রাখা হউক৷ অথচ কেন্দ্রের তুলনায় রাজ্যগুলির নজরদারি রাখার ক্ষমতা অনেক বেশি৷ রাজ্যগুলিতে নজরদারি রাখার জন্য যে পরিকাঠামো রয়েছে তা সম্মিলিতভাবে কেন্দ্রের চাইতে ৬ গুন হবে৷
তিনি বলেন, জিএসটি চালু হলে সবকিছু অনলাইনে হবে৷ কি পরিমান কর জমা হচ্ছে তা দেখতে পারবে জিএসটি নেটওয়ার্ক৷ কিন্তু, আগে যেখানে ১৫ কোটি টাকা পর্যন্ত বাৎসরিক বাণিজ্যের নজরদারি করত রাজ্য, সেখানে এখন বলা হচ্ছে সরাসরি কেন্দ্র এর নজরদারি করবে৷ তিনি বলেন, অন্তত ৭০ শতাংশ ডিলার রয়েছেন যাদের বাৎসরিক বাণিজ্য ১৫ কোটি টাকার নীচে৷
অর্থমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা সহ আরো ১৪/১৫টি রাজ্য সমান্তরাল নজরদারি ব্যবস্থার পক্ষে মত দিয়েছে৷ কেরলার অর্থমন্ত্রী বৈঠকে স্পষ্ট জানিয়েছে যে, তারা ক্ষমতা বিভাজনের পক্ষে৷ যে পদ্ধতিই চালু হউক চলতে হবে যুক্তরাষ্ট্রীয় সমবায়ের মাধ্যমে৷ ফলে, আগামী ২০ নভেম্বর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী সমস্ত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের সাথে অমীমাংসিত ইস্যুগুলি নিয়ে বৈঠক করবেন৷ এরপর আগামী ২৪ এবং ২৫ নভেম্বর পুণরায় বৈঠক হবে জিএসটি কাউন্সিলের৷ এরইমধ্যে তৈরি করা হবে জিএসটি আইন, ক্ষতিপূরণ আইন ইত্যাদি৷ তারসাথে রাজ্যগুলির দাবি-আপত্তি নিয়ে মতামতও জানতে চাওয়া হবে৷
এদিকে, নতুন পদ্ধতিতে পণ্য পরিষেবা কর চালু হলে কর ব্যবস্থা সরলীকরণ হবে তা মানেন অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহাও৷ তিনি জানিয়েছেন, জিএসটি চালুর উদ্দেশ্য হল বহু করের অবলুপ্তি ঘটানো৷ তাতে কর ব্যবস্থা সরলীকরণ হবে৷ ফলে, গোটা দেশে এক পণ্য এক মূল্য এই পদ্ধতিতে চলবে৷ বহু পণ্য রয়েছে যেগুলির দাম কমবে, আবার কিছু কিছু পণ্যের দাম বাড়বেও৷ উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, খাদ্যশষ্যে শূন্য কর থাকবে৷ ফলে, কমবে দাম৷ আবার, তামাকজাতীয় পণ্যকে রাখা হবে সর্বোচ্চ স্তরে এবং তার সাথে বসবে সেসও৷ ফলে বাড়বে দাম৷ কিন্তু, কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতা নিয়ে যে মতানৈক্য দেখা দিয়েছে তা না মিটলে জিএসটি চালুর ক্ষেত্রে চিন্তা রয়েই যাবে কেন্দ্রীয় সরকারের, এদিন অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহার বক্তব্যে সেটাই স্পষ্ট হয়ে গেছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *