পৃথক স্থানে তিন গৃহবধূর উপর বর্বরোচিত নির্যাতন

domestic violanceনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৯ এপ্রিল৷৷ রাজ্যে নারী নির্যাতন ও গৃহবধূ হত্যার ঘটনা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে৷ অনেক ক্ষেত্রেই মামলা দায়ের করেও ন্যায় বিচার মিলছে না৷ তাতে তীব্র ক্ষোভ ধূমায়িত হচ্ছে৷ নারী সংগঠনগুলো তাতে অসন্তুষ্ট ব্যক্ত করেছে৷
রাজধানী আগরতলা শহর সংলগ্ণ সুভাষনগরে গত ২৩দিন আগে কাজলরাণী দেবনাথ নামে এক গৃহবধূকে তার স্বামী কৃষ্ণ দেবনাথ পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছিল৷ এব্যাপারে যথারীতি মামলাও দায়ের করা হয়৷ পুলিশ অবশ্য অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে৷ আজ অভিযুক্ত কৃষ্ণ দেবনাথকে আদালতে তোলা হয়৷ এদিকে, সারা ভারত গণতান্ত্রিক নারী সমিতি ডুকলি অঞ্চল কমিটির পক্ষ থেকে আজ আদালত চত্বরে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়৷ অভিযুক্ত কৃষ্ণ দেবনাথের জামিন মঞ্জুর না করার জন্য দাবি তোলা হয়৷ জেলে পড়ে যাতে পচে গলে তার মৃত্যু হয় সেই দাবিও জানিয়েছেন নারী নেত্রীর৷ উল্লেখ্য অভিযুক্ত কৃষ্ণ দেবনাথকে গ্রেপ্তাররে জন্য ঘটনার পর আগরতলা পূর্ব মহিলা থানায় নারী সমিতির পক্ষ থেকে ডেপুটেশনও দেওয়া হয়েছিল৷
এদিকে, আগরতলা পশ্চিম থানাধীন ভট্টপুকুর এলাকার এক গৃহবধূকে নির্যাতন চালিয়ে গুরুতরভাবে জখম করা হয়েছে৷ গৃহবধূটির নাম বাপ্পি রায়৷ তাকে জিবি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ জানা যায়, প্রায় পাঁচবছর আগে সামাজিক প্রথায় ভট্টপুকুর এলাকার স্বপন রায়ের সঙ্গে বাপ্পি রায়ের বিয়ে হয়৷ স্বপন রায় গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরে কর্মরত৷ তাদের দু বছরের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে৷ বিয়ের এক বছর পর থেকেই পারিবারিক কলহ চলছে৷ স্বামী স্বপন রায় গৃহবধূ বাপি রায়ের উপর প্রতিনিয়ত নির্যাতন চালিয়ে আসছে৷ গত পরশু রাতে নির্যাতনের মাত্রা চরম আকার ধারণ করে৷ স্বামীর নির্যাতনে স্ত্রী গুরুতরভাবে আহত হয়৷ তাকে জিবি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ এব্যাপারে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আগরতলা পশ্চিম মহিলা থানায় মামলা দায়ের করা হয৷ মহিলা থানার পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করলেও আদালত থেকে তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে৷ তাতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গণতান্ত্রিক নারী সমিতির নেত্রীরা৷ গৃহবধূকে নির্যাতন চালিয়ে হাসপাতালে পাঠানোর পরও কিভাবে অভিযুক্ত স্বামী জামিনে মুক্তি পেল সে প্রশ্ণ তুলেছেন তারা৷ পুলিশের ভূমিকা ঘিরে নারী নেত্রীদের মধ্যে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে৷ ঘটনার প্রতিবাদে নারী নেত্রীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন৷ অভিযুক্ত স্বামী স্বপন রায়কে পুনরায় গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টন্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে৷ নারী নেত্রীরা জানান, গৃহবধূ বাপি রায় সহনশীল মহিলা৷ স্বামী তার উপর ক্রমাগত নির্যাতন চালিয়ে আসছে৷ বেশ কয়েকবার বিষয়টি মীমাংসার জন্য নারী সমিতির পক্ষ থেকেও চেষ্টা করা হয়েছে৷ কিন্তু স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনরা তাতে পাত্তা দিচ্ছেন না৷ এরই শেষ পরিণতি ঘটেছে গত পরশু রাতে৷ নারী নির্যাতন কারী স্বপন রায়ের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্তা গ্রহণের জন্য তারা দাবি জানিয়েছেন৷ অন্যথায় তারা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবেন বলে হঁুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে৷
বোধজংনগর থানা এলাকার বণিক্য চৌমুহনীতে এক গৃহবধূকে তার স্বামী পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে৷ নির্যাতিতা গৃহবধূটির নাম ঝর্না দাস৷ অভিযুক্ত স্বামীর নাম বাদল দাস৷ সে পেশায় দিনমজুর৷ রবিবার রাতে কাঠের ফাইল দিয়ে আঘাত করে স্ত্রীকে গুরুতরভাবে জখম করেছে৷ বর্তমানে ঝর্না দাস নামে ঐ মহিলা জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷থ হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে নির্যাতিতা মহিলা জানান, তার স্বামী বাদল দাস প্রায়ই আকন্ঠ মদ্যপান করে এসে তাকে মারধর করে জানা গেছে, বাদল দাস বাংলাদেশের এক মহিলাকে বিয়ে করেছে৷প্রথম স্ত্রী ঝর্না দাসকে মারধর করে বাড়িতে থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য সে এধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷ নির্যাতিতা মহিলা ন্যায় বিচার দাবি করেছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *