নিজস্ব, প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৫ এপ্রিল৷৷ আগামী ১৮ এপ্রিল থেকে দশদিনের জন্য বন্ধ থাকবে পালাটানায় বিদ্যুৎ উৎপাদন৷ ফলে, মারাত্মক বিদ্যুৎ সংকটের মুখে পড়তে চলেছে গোটা রাজ্য৷ পাশাপাশি সমস্যার মুখে পড়বে বাংলাদেশও৷ ওটিপিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সংস্কার কাজের জন্য পালাটানায় বিদ্যুৎ উৎপাদন দশদিনের জন্য বন্ধ রাখা হবে৷ কিন্তু এর পেছনে অন্য কারণ রয়েছে, এনিয়ে নানা মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে৷
সূত্রের খবর, পালাটানা বিদ্যুৎ প্রকল্পে যে অত্যাধুনিকমানের যন্ত্রপাতি লাগানো হয়েছে সেগুলি ঠিকঠাকভাবে চালানোর মত দক্ষ প্রকৌশলী নেই৷ অবাক করার বিষয়, বিদেশ থেকে প্রচুর অর্থ খরচ করে এই যন্ত্রপাতিগুলি আনা হলেও এগুলির সঠিকভাবে চালানোর মত দক্ষ প্রকৌশলী ভারতবর্ষেই নেই৷ ফলে, কয়েকদিন বাদে বাদেই যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়৷
ওএনজিসি জানিয়েছে, পালাটানাকে গ্যাস সরবরাহে কোন সমস্যা নেই৷ পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ করা এখন সম্ভব হচ্ছে৷ কয়েকদিন আগেও গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা ছিল৷ তা এখন মিটিয়ে নেওয়া হয়েছে৷ ওএনজিসির জনৈক কর্তা জানিয়েছেন, পালাটানাকে এখন সারা বছরই পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই৷
তাতে, স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ণ উঠেছে ওটিপিসি পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিগুলি কতটা সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারছে৷ কারণ, এই পালাটানার ওপর এখন রাজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশও নির্ভরশীল৷ গত ২৩ মার্চ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে৷ পালাটানার বিদ্যুৎ নির্ভর করেই রাজ্য বিদ্যুতে উদ্বৃত্ত৷ ফলে, পালাটানা বন্ধ হয়ে গেলে রাজ্যের নিজস্ব উৎপাদন দিয়ে সারা ত্রিপুরা সবসময় আলোকিত করে রাখা সম্ভব হয়ে উঠবেনা৷
বর্তমানে গড়ে প্রতিদিন ২৬০-২৬২ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে রাজ্যে৷ রাজ্যের নিজস্ব উৎপাদন প্রায় ১১০ মেগাওয়াট৷ এছাড়া নেপকো দিচ্ছে প্রায় ৭৫ মেগাওয়াট৷ ফলে, প্রয়োজনীয় বাকি বিদ্যুতের যোগান দেয় পালাটানা৷ ফলে, পালাটানা বিদ্যুৎ প্রকল্প দশ দিন বন্ধ থাকলে স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যে বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দেবে৷ সেন্ট্রাল গ্রিড থেকে চাহিদা অনুযায়ী ৫০-৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ক্রয় করে নিগম৷ ফলে, পালাটানা বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধ থাকার সময় বাইরে থেকে আরো বিদ্যুৎ ক্রয় করা প্রয়োজন দেখা দেবে৷ সেক্ষেত্রে আগামী ১৮ এপ্রিল থেকে রাজ্যে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
2016-04-16