পূর্ত দফতরেরর পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী, কমলপুর-গন্ডাছড়া-জম্পুইজলা মহকুমা সদরকেও জাতীয় সড়কের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে

CM MANIKনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১ মার্চ৷৷ ৪৪ নং জাতীয় সড়ক ছাড়াও রাজ্যের দাবি মেনে ত্রিপুরায় আরও পাঁচটি প্রধান সড়ককে জাতীয় সড়ক হিসেবে ইতিমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ এই ছয়টি জাতীয় সড়কের কাজের অগ্রগতি নিয়ে আজ মহাকরণে পর্যলোচনা বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ উল্লেখ্য, গত বছরই কেন্দ্রীয় ভূতল পরিবহন মন্ত্রকের মন্ত্রী নীতিন গড়করি আগরতলায় এসে নতুন জাতীয় সড়কগুলোর কেন্দ্রীয় অনুমোদনের ঘোষণা দিয়ে যান৷ ত্রিপুরায় আগে একমাত্র জাতীয় সড়কটি ছিল ৪৪ নং জাতীয় সড়ক৷ ধর্মনগরের চুরাইবাড়ি থেকে আগরতলা ও উদয়পুর হয়ে সাব্রুম পর্যন্ত এই জাতীয় সড়কের দৈর্ঘ ৩৩১৯১ কিলোমিটার৷ বর্তমানে এই জাতীয় সড়কে আগরতলার নিকটে আমতলি থেকে উদয়পুরের মাতাবাড়ি পর্যন্ত এবং মাতাবাড়ি থেকে সাব্রুম পর্যন্ত দুটি পর্যায়ে ডাবল লেইনের কাজ চলছে৷ পর্যলোচনা সভায় পূর্ত দফতরের প্রধান সচিব লোকরঞ্জন জানান, এই জাতীয় সড়কের পানিসাগর থেকে মুঙ্গিয়াকামি পর্যন্ত ১০৪ কিলোমিটার অংশে ডাবল লেইন করার জন্য ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের কাছে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে৷ এছাড়া, নতুন যে পাঁচটি জাতীয় সড়ক ঘোষিত হয়েছে সেগুলো হল, জাতীয় সড়ক ৪৪ এ৷ মনু, ছৈলেংটা, লালাডিঙ্গাবাড়ি, কাঞ্চনপুর, ভাঙমুন হয়ে সিমলুঙ পর্যন্ত এড দৈর্ঘ ১৩৪ কিলোমিটার৷ কুমারঘাট, কৈলাসহর, মানিকভান্ডার, খোয়াই, তেলিয়ামুড়া, অমরপুর ও শিলাছড়ি হয়ে সাব্রুম পর্যন্ত জাতীয় সড়কটি হল এন এইচ -২০৮ যার দৈর্ঘ ২৬৫ কিলোমিটার৷ কৈলাসহর, ধর্মনগর, কাঁঠালতলি হয়ে আসামের কুকিতল পর্যন্ত জাতীয় সড়কটি হল এন এইচ-২০৮ এ যার দৈর্ঘ ত্রিপুরায় মধ্যে কৈলাসহর থেকে কাঁঠালতলি পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার৷ কাঁঠালতলি থেকে আসামের কুকিতল পর্যন্ত এর দৈর্ঘ ৭৬৬ কিলোমিটার৷ জোলাইবাড়ি থেকে বিলোনিয়া পর্যন্ত এন এইচ ১০৮এ জাতীয় সড়কের দৈর্ঘ ২২৯০ কিলোমিটার এবং খোয়াই থেকে আগরতলা পর্যন্ত এন এইচ -১০৮ বি জাতীয় সড়কের দৈর্ঘ ৫৫ কিলোমিটার৷ এখন রাজ্যে জাতীয় সড়কের মোট দৈর্ঘ হল ৮৫৩৮১ কিলোমিটার৷ পর্যলোচনা সভায় দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৪৪ নং জাতীয় সড়ক ছাড়া নতুন পাঁচটি জাতীয় সড়কের উন্নয়নের জন্য  প্রজেক্ট রিপোর্ট বা ডি পি আর তৈরির প্রক্রিয়া চলছে৷ এছাড়াও, এই সড়কগুলোর প্রাথমিক মেরামতির কাজেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ রাজ্যের সবকয়টি জাতীয় সড়কের কাজকর্মের তদারকির জন্য পূর্ত দফতরকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পর্যলোচনা সভায় পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কমলপুর, গন্ডাছড়া ও জম্পুইজলা এই তিনটি মহকুমা সদর এখনও কোনও জাতীয় সড়কের সঙ্গে যুক্ত নয়৷ এই তিনটি মহকুমা সদরকে ভবিষ্যতে জাতীয় সড়কের সঙ্গে কীভাবে যুক্ত করা যায় তা খতিয়ে দেখতে পূর্ত দফতরকে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি৷ এছাড়াও, রাজ্যের জাতীয় সড়কগুলোর উন্নয়ন ত্রিপুরা ভবনের একজন আধিকারিককে দায়িত্ব নিতে নির্দেস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে মুখ্যসচিবকে বলেছেন তিনি৷ শেই আধিকারিক শুধু জাতীয় সড়কের বিষয়ই নয়, প্রয়োজনে আগরতলায় বিমান চলাচল ও বিমানন্দরের উন্নয় এবং রেলপথ সম্প্রসারণের বিষয়েও কেন্দ্রেই সঙ্গে তদ্বির-তদারকি করবেন এমনই পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও পূর্ত দফতরের মন্ত্রী বাদল চৌধুরী, মুখ্যসচিব যশপাল সিং, পূর্ত দফতরের প্রধান সচিব লোকরঞ্জন এবং দফতরের পদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *