পারিবারিক হিংসায় দুই গৃহবধূর মৃত্যু

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৫ ফেব্রুয়ারী৷৷ রাজ্যে নারী সংক্রান্ত অপরাধ ক্রমেই বেড়ে চলেছে৷ গত চবিবশ ঘন্টায় রাজ্যের পৃথক স্থানে দুই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে৷ প্রতিটি ঘটনারই মামলা নেওয়া হয়েছে৷ প্রাথমিক তদন্তে দেখা গিয়েছে মূলত পারিবারিক বা গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হয়েই তাদের মৃত্যু হয়েছে৷
সংবাদে প্রকাশ, আমতলী থানার অধীন বৈষ্ণবটিলা এলাকার এক গৃহবধূকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে স্বামী, শাশুড়ী, ভাসুর ও জা এর বিরুদ্ধে৷ মামলা রুজু করেছেন মৃতার বাবা নারায়ণ চন্দ্র বিশ্বাস৷ জানা গিয়েছে, বিশালগড় থানার অধীন রামছড়া এলাকার বাসিন্দা নারায়ণ বিশ্বাস অভিযোগ করেছেন চার বছর আগে আমতলী থানার অধীন বৈষ্ণবটিলার বাসিন্দা প্রয়াত হারধন সরকারের ছেলে নিখিল সরকারের সাথে তাঁর মেয়ে মামন বিশ্বাস (২৬) এর বিয়ে হয়েছিল সামাজিক রীতিনীতিতেই৷ বিয়েতে বর পক্ষের দাবী অনুযায়ী নগদ টাকা ও সমস্ত আসবাবপত্র দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু বিয়ের কয়েকমাস পর থেকে তাঁর মেয়ের উপর অমানবিক নির্যাতন শুরু করে স্বামী নিখিল সরকার৷ নারায়ণবাবুর আরও অভিযোগ বড় ভাইয়ের স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে নিখিলের৷ ফলে স্ত্রী মামনকে সে প্রায়ই মরাধর করত৷ গত চার বছর যাবৎ বিয়ের পর কোন সন্তান হচ্ছে না এনিয়ে মামনকে দোষ দিত নিখিল৷ যদিও ডাক্তারী পরীক্ষায় ধরা পড়ে নিখিলের কারণেই মামনের গর্ভে সন্তান আসছে না৷ তবু মামনকে দায়ী করে মারধর করত৷ ফলে বাধ্য হয়ে রবিবার আত্মহত্যা করে মামন৷ এই ঘটনায় স্বামী নিখিল, ভাসুর সুনীল, জা অর্চনা এবং শাশুড়ি বাসনা সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে৷ মামলার নম্বর ২৪/১৬৷ মামলাটি হয়েছে আইপিসি ৪৯৮(ক) এবং ৩০৬ ধারায়৷ যদিও ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা সবাই পালিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছে৷ অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও৷
এদিকে, খোয়াই থানার অধীন উত্তর জয়পুর এলাকায় বিয়ের চার মাসের মধ্যেই এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ৷পুলিশ সূত্রের খবর নিহত গৃহবধূর নাম পূর্ণিমা দেব (২০)৷ তার বাবা রঞ্জন দেব এর অভিযোগ ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে তাঁর মেয়ে পূর্ণিমা দেবের সাথে রতন দেবনাথের বিয়ে হয়৷ বিয়ের পর থেকেই শুরু হয় পণের জন্য অত্যাচার৷ তাদের অত্যাচারে আত্মহত্যা করেছেন৷
অন্যদিকে, ধলাই জেলার মনু থানার অন্তগর্ত ভক্তগর্ত ভক্তমোহন পাড়ার গোয়ালা বস্তি এলাকায় দাদুর পাশবিকতায় ফাঁসিতে আত্মঘাতী হয়েছেন এক সুকল ছাত্রী৷ পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত ছাত্রী ধর্ণা রাণী দেববর্মার মা প্রভারাণী দেববর্মার অভিযোগ জয়সিং দেববর্মার নামের পাশের বাড়ির কাকা শ্বশুড় তার মেয়ের শ্লীলতাহানী করেছিল৷ প্রসঙ্গত, একের পর এক নারী সংক্রান্ত অপরাধের ঘটনা ঘটে চলেছে৷ এই অপরাধের পেছনে দেখা যাচ্ছে অনেক ক্ষেত্রেই পারিবারিক হিংসাই দায়ী৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *